আল্লাহ তাআলা বলেন- যারা আল্লাহর কিতাব তিলাওয়াত করে, নামায কায়েম করে এবং আমি তাদেরকে যে রিযিক দিয়েছি তা থেকে( সৎকাজে) ব্যয় করে গোপনে ও প্রকাশ্যে, তারা এমন ব্যবসার আশাবাদী, যা কখনও লোকসান হয় না । আল্লাহ তাদেরকে তাদের পূর্ণ প্রতিফল দেন এবং নিজ অনুগ্রহে আরও বেশি দান করেন । নিশ্চয়ই তিনি অতি ক্ষমাশীল, অত্যন্ত গুণগ্রাহী । - সূরা ফাতির( ৩৫) ২৯- ৩০
হযরত মোহাম্মদ (স:) নিজেও তিলাওয়াত করতেন এবং সাহাবীদের থেকেও তিলাওয়াত শুনতেন । নবীজী অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে কুরআন মাজীদ তিলাওয়াত করতেন । হাদীস ও সীরাতের কিতাবে এর বিশদ বিবরণ পাওয়া যায় । নামাযে, নামাযের বাইরে, রাতের আঁধারে, দিনের আলোতে সর্বাবস্থায় তিনি তিলাওয়াত করতেন । উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রা. বলেন, নামাযে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে নবীজী এত দীর্ঘ সময় তিলাওয়াত করতেন যে, তাঁর পা মুবারক ফুলে যেত ।( দ্রষ্টব্য সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৮১৯, ২৮২০)
রমযান মাসে হযরত জিবরীলআ.- কে নবীজী পূর্ণ কুরআন শোনাতেন এবং জিবরীল আ. থেকেও পূর্ণ কুরআন শুনতেন ।( দ্রষ্টব্য সহীহ বুখারী, হাদীস ৬)
রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেভাবে নিজে তিলাওয়াত করতেন তেমনি সাহাবীদের থেকেও তিলাওয়াত শুনতেন । একবার নবীজী আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদরা.- কে বললেন, তুমি আমাকে একটু তিলাওয়াত করে শোনাও তো । আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি আপনাকে তিলাওয়াত শোনাব, আপনার উপরই তো কুরআন নাযিল হয়েছে! নবীজী বললেন, আমার মনে চাচ্ছে, কারো থেকে একটু তিলাওয়াত শুনি! এ শুনে আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. সূরা নিসা তিলাওয়াত করতে শুরু করলেন । পড়তে পড়তে যখন এ আয়াত পর্যন্ত আসলেন- সুতরাং( তারা ভেবে দেখুক) সেই দিন( তাদের অবস্থা) কেমন হবে, যখন আমি প্রত্যেক উম্মত থেকে একজন সাক্ষী উপস্থিত করব এবং( হে নবী), আমি তোমাকে ওইসব লোকের বিরুদ্ধে সাক্ষীরূপে উপস্থিত করব?- সূরা নিসা( ০৪) ৪১)
এতটুকু তিলাওয়াত করার পর নবীজী বললেন, ঠিক আছে । আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেন, নবীজী থামতে বলার পর আমি তাঁর দিকে তাকিয়ে দেখি, তাঁর দুচোখ বেয়ে অশ্রু ঝরছে ।( দ্রষ্টব্য সহীহ বুখারী, হাদীস ৫০৫৫, ৪৫৮২, ৫০৪৯) যারা তিলাওয়াত করে তাদেরকে আল্লাহর রহমত আচ্ছাদিত করে নেয় ।